পলল পাথরের জং
কতকাল ধরে চেষ্টা করে চলেছি আমি
জন্মের দরজার ছবি আঁকার, অনেকদিন কেটে গেছে
তবুও আমার ওই পরিকল্পনা সফল
হয়নি।
যে ছবি এঁকেছি মনে হচ্ছে
কখনো গুহার মুখ
কখনো বা কমণ্ডলু
আবার কখনো দেখি মাটির প্রদীপ
তাতে তেলে ভিজিয়ে তুলোর বাতি
দিলে
রক্তিম রাগের মতো জ্বলে আলো,
আমার দুচোখে লাগে জীবাশ্ম যোনির
গায়ের পলল পাথরের জং।
পূর্বপুরুষের লেজ
প্রতিদিন লিঙ্গের মসৃণ
শরীরে নিজের মুখ নিয়ে গিয়ে দেখি
আমিই
আমার পূর্বপুরুষ,
আমি-ই দাদুর বাবা, বাবার বাবা ও
আমার বাবাও আমি।
এদের সবার একটাই সাধারণ গুণ
এরা সকলেই ইঁদুরের মতো ঘুরতে
ঘুরতে
লোক দেখলে টুক করে গর্তে ঢুকে
যায়, দেখে
গর্তের ভিতরে আমি।
ধর্ষিতা তোমার নাভি, চোখের গোলক, ক্ষতবিক্ষত যোনির
চারপাশে জমে থাকা রাতের কান্নার
জল,
আমার নিজের মুখ দেখি
অথচ চিনতে পারি না,
মনে হয় এ আমি তো আমি নয়।
তবুও আমার পূর্বপুরুষের কাছ
থেকে খসে খসে
লেজের কিছুটা অংশ
আজো আছে বলে অনুভূত হয়
যাকে ধরে এখানে আমার আসা।
দেখা
শুকদেব ও তার বাবা দুজনে চলেছে
রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে কিছুটা
সামনে, কিছুটা পিছনে
ভদ্রলোকের পোশাক গায়।
তাদের রাস্তার ধারে বাঁধানো
পুকুর
কিছু মেয়ে স্নান করছে নগ্নপ্রায়,
শুকদেবকে দেখে মেয়েগুলোর তেমন
কিছু মনে হল না
তার বাবাকে দেখে মেয়েরা নিজেদের
অগোছালো
শরীরে জলের ডেউ দিয়ে ঢেকে দিল
আকণ্ঠ।
এমন অবস্থা দেখে বাপ-বেটা
আলোচনা করল,
শেষে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত
হল যে
বাবার চোখ দিয়েই তো ছেলে দেখে
ছেলেকে আলাদা করে আর দেখানোর
কিছু নেই।
গর্ভিণী কবিতা
ভোরের জ্যোৎস্নায় হরিণীর
ঋতুস্রাব
বন্ধ হয়ে গেলে দেখি আমার কবিতা
গর্ভবতী,
ওকে তো কখনো মানুষের সঙ্গে
দেখিনি, দেখেছি
পুরুষ ঘোড়ার কিংবা কুকুরের পাশে
পাশে
হেঁটে দৌড়ে শুয়ে বসে ছবি নিতে।
তারপর...
সে অনেকদিন হল
কবিতা কেমন গায়ে গতরে গর্ভিণী
খাদ্যপ্রাণযুক্ত অম্লমধুর রসাল
ফলগুলি
আপেলের পরিবর্তে লুকিয়ে লুকিয়ে
বেশ
মজা করে খায় আর রোজ রাতে
গবঘুরে ষাঁড় এসে তার সঙ্গে
ভালোমন্দ
কিছু কথা বলে আর মনে করে সে
কবিতা তার সৃষ্টি।
পদ্মপাতার রস
সে রোজ চাঁদের কাছে নিয়ে যায়
পদ্মপাতা
কাঁচা রসে মুখ ধুয়ে পূর্ণিমার
রাতে তাকে
দেখা যায় আকাশে বিছিয়ে দিয়ে
জ্যোৎস্না মেখে ভাত খেতে,
যেখানে আমার ছায়া পড়েছে সেখানে
হারমোনিয়াম
একা একা গান গায় অন্ধকারে।
আমার কবিতা যদি ভিখিরির মতো হয়ে
যায়
লোকাল ট্রেনের কামরায় বাজে
অন্ধের খঞ্জনি
জীবনের পাশ থেকে এক লোক চলে
গেলে
আর একজনের অপেক্ষা করে আমার
কবিতা
পদ্মপাতায় একাকী মুখ দেখে ভাবে
তার কথা।ছবি গুগ্ল থেকে সংগৃহীত
No comments:
Post a Comment