-->

কবিতাঃ সুদক্ষিণা


চিলাপাতা

চিলাপাতা জঙ্গলের এই দুপুর, নেশাধরানো ঝিঁঝিঁর ডাক আর বুনো ফুলের গন্ধ মনে করিয়ে দেয় দলবেঁধে পাহাড়ের গায়ে পা গেঁথে সেই পাঁচশ বছর আগেকার চিরপাইন বৃক্ষেরা একজন ব্যক্তিত্ব। তারা দল বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে, যেন মনে আর বিজ্ঞানে তারা সমৃদ্ধ এক জাতি। কুরকুরে খেয়ে তাদের গায়ে কমলার উজ্জ্বলতা ছুঁড়ে দিতে লজ্জা হয়। ভাঙ্গনের দেশ থেকে এসে সহ্য হয়না বন্যপ্রাণের সবুজ নিথরতা।

আসলে উহারা আমাদের অতি অতি বৃদ্ধ পিতামহ মাতামহী।শিশুকে আমরা রাত আকাশের বিকীর্ণ আলো দেখিয়ে ভুল বুঝিয়েছি এতদিন। কোথাও যায়নি তারা আমাদের ছেড়ে। শুধু আত্মার খাদ  ঝরে গেলে হিমালয়ান বনভূমিতে বৃক্ষদেবতার অংশভাক হয়ে আকাশের দিকে মাথা তুলে জন্মান্তরে এসেছে।

চিলাপাতা

ওগো রুখো জঙ্গুলে রাস্তাজানি, বনপথ বললে তোমাকে অনেকটাই আপস করিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু যে হলুদ ছত্রাক ঝরাফুলের ভণিতায় পড়ে থাকে পথের পাশে, কিংবা উল্লম্ফনব্যাকুল জোঁক, তারও ভেতর অদ্ভুত দর্শন পতঙ্গ, তোমাদের সঙ্গে এজনমে প্রথম দেখা যদিও, তবুও, ওগো কেউ কোনদিনও ( বিশ্বাস করো) আমার হাত ছেড়ে যায়নি ওই তোমার পর্ণশরীরে। তবু কেন এই বৈকালিক নভেম্বর, চিলাপাতা বনবাংলোয়, তেমনই কারো গায়ের গন্ধ! আমি পথভ্রমি। রাতজাগানিয়া পাখির আর লেপার্ডের চোখের ভিতরে রাক্ষসীভাষা 'ড়ে ফেলার ভয়ে, মধ্যরাত্রে, বিছানা ছেড়ে জলত্যাগ 'রে, পুনশ্চ কপাট আটকে রাখি।

সততব্যাকুল পতঙ্গশরীর জুড়ে আঁধারের আজান একথাই বলে, ভোর হলে চলে যাবে দূরে...

No comments:

Post a Comment

একটি লড়াকু পত্রিকা সম্পাদকমণ্ডলীঃ   অভিজিৎ   ঘোষ ,  অনির্বাণ সরকার ,  এয়োনিয়ান   অনির্বাণ ,  সুমিত পতি ,  মনোহর হোসেন ...