-->

কবিতাঃ রাণা রায়চৌধুরী





টেস্ট ক্রিকেটারের সাদা টুপি

 আনন্দবাজারের প্রথম পৃষ্ঠায় দিল্লির রাস্তায় একটি গোল দাগের ভিতর গৃহহীনকে কেউ ভাত দিয়েছে, সঙ্গে একটা কলা, মানে একটা ফল। ভাইরাসের দিনে যেন দেবতাকে ফল দিয়ে কেউ সন্তুষ্ট করেছে, ওই গৃহহীন একজন দেবতা --- এই ছবি আমার ভিতর ভয় ভক্তির উদ্রেক ঘটায়। ভিতর ঘর থেকে ডাক আসে 'খেতে এসো!' আমি দিল্লির রাস্তার ওই গৃহহীন দেবতাকে সঙ্গে করে খেতে যাই, বলি রুটি বাটিচচ্চরি খাবে তো! গৃহহীন দেবতা এবারে আই পি এল হবে কিনা আমায় জিজ্ঞেস করে, আমি 'জানি না' উত্তর দিই, আমি 'নট ইন্টারেস্টেড' বলি তাকে --- মানে ওই গৃহহীন গৃহীত দেবতাকে।
আমরা দুজনেই রুটি ছিঁড়ি, ভাইরাস ছিঁড়ি, দু'এক গাছি ভালো ভালো বালও ছিঁড়ে এই দিগন্তব্যাপী আতঙ্কের দিকে ছুড়ে মারি।
আমাদের সব গোলদাগ মুছে যায়, আই পি এল চালু হয়, গৃহহীন দেবতা গৃহস্থালি খুঁজে পেয়ে কোনো এক দলের সমর্থকও হয়ে যায় এবং সমর্থনের নিয়ম মেনে সে 'আউট আউট' বলে দিশাহীন চিৎকারও করে ওঠে...                                


আবালচোদার দল!

একি আমার ভিতর এত বিদ্বেষ কেন?

এবার তুমি আমার জন্য কি আনবে ভাবো
মোমবাতির আলো
না কি ডেটল সাবান ----

রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে এলে অবশেষে?
সঙ্গে শেষ পাতে একটু রাজনীতিও রেঁধেছ?

প্রকৃতি আজ বেশ বিদ্যুৎমন্ত্রীর মতো ঝলমলে

তুমিই আমাকে লালেঝোলে ঝোলেঅম্বলে
মানুষ করেছ, জানি তা

মোমবাতির ডগায় অনেক না-দেখা
ভাইরাস চুপে গুনগুন করে 
                                                       


আমি সি এম বা পি এম-এর ফান্ডে এই গৃহবন্দী অসুখের দিনে কিছু কি দান করব?

দান করার মতো ঐশ্বর্য বা অহঙ্কার আমার বাগানে নিভে থাকা ফুলের মতো ফুটে আছে

আমি এইসব থেকে ফুটে যেতে চাই, চাইও না, একটু কাছে এসো, গল্প করি, তুমি গান জানো না? আমিও জানি না, আমরা কিছুই জানি না, তবু আছি ফান্ডের অপেক্ষায়, তবু আছি ওই সন্ধের শাঁখের ধ্বনি শোনার জন্য, তুমি ভালো শঙ্খ বাজাও, আমি বেজে উঠি

টিকটিকি বেজে ওঠে দেয়ালে এই গৃহবন্দী অসুখের দিনে


ছবিঃ অনুষ্টুপ লাই

No comments:

Post a Comment

একটি লড়াকু পত্রিকা সম্পাদকমণ্ডলীঃ   অভিজিৎ   ঘোষ ,  অনির্বাণ সরকার ,  এয়োনিয়ান   অনির্বাণ ,  সুমিত পতি ,  মনোহর হোসেন ...